খেজুরের উপকারিতা ও যেভাবে খাবেন জেনে নিন। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আপনারা সকলেই আশা করি ভাল আছেন। আজকে আপনাদের সামনে খেজুরের উপকারিতা নিয়ে কথা বলব। খেজুর অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সারাদিনে যদি কয়েকটি খেজুর খেয়ে কোন ব্যক্তি অনাহারে থাকে তবুও তার শরীরে কোন ক্লান্তি বোধ হবে না। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি। এমন কোন ব্যাক্তিকে পাওয়া যাবে না যে খেজুর সে পছন্দ করে না। সকলের কাছে খেজুর একটি পছন্দের খাবার।
মূলত এই খেজুরের মূল উৎপত্তি হচ্ছে আরব দেশে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিজ হস্ত দ্বারা খেজুর গাছ সর্বপ্রথম রোপণ করেন। যার ফল আমাদের জন্য অত্যন্ত বরকতময়। পৃথিবীর মধ্যে এই ফলটি হচ্ছে জান্নাতি ফল।
খেজুরের কয়েকটি প্রকারভেদ
খেজুরের মধ্যে কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে। প্রকারভেদে খেজুরের স্বাদ আলাদা হয়ে থাকে। একটি রয়েছে শুকনো খেজুর আর অপরটি হচ্ছে শুকনো ছাড়া। এই দুই ধরনের খেজুরের মধ্যে রয়েছে অত্যাধিক পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বরকত ময়। নিম্নে কয়েকটি খেজুরের প্রকারভেদ দেয়া হলো।
> আজওয়া খেজুর
> মরিয়ম খেজুর
> কামরাঙ্গা খেজুর
> বরই খেজুর
> সুপ্রি খেজুর
> সুক্কারি খেজুর
> মাসদুল খেজুর
এছাড়াও আরও অনেক জাতের খেজুর রয়েছে,যার স্বাদ অতুলনীয়।
খেজুরের পুষ্টি উপাদান সমূহ
খেজুর হচ্ছে অমৃত ফল যার স্বাদ খুবই মিষ্ট। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি প্রোটিন ক্যালরি।যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাছাড়া আরও রয়েছে, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং নিয়াসিন, থিয়ামিন, ও রিবোফ্লেভিন উপাদান।
নিম্নে খেজুরের পুষ্টি উপাদান সমূহ দেওয়া হল
> প্রোটিন
> ক্যালরি
> ক্যালসিয়াম
> গ্রামফাইবার
খেজুরের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
খেজুর শুধু খাবার নয় এটি আমাদের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে। খেজুর খেলে আমাদের দেহের মধ্যে যে সমস্ত উপকার হতে পারে তা হল
> আমাদের শরীরের দুর্বলতা দূর করে।
> আমাদের দেহের পেশী গঠনে অত্যন্ত ভূমিকা পালন করে।
> খেজুরে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের দৃষ্টিশক্তির জন্য অত্যন্ত উপকারী।
> আমাদের শরীরে রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে ।
> হৃদপিণ্ড ও ক্যান্সার নিরাময় করতে খেজুরের ভূমিকা অত্যন্ত।
এছাড়াও খেজুর আমাদের আরও নানান রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। আমাদের দেহের জন্য উপকারী।
খেজুর খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
প্রত্যেক জিনিসের একটা নিয়ম আছে। নিয়ম অনুযায়ী চললে সেটার সুফল পাওয়া যায়। আজকে আমরা জানবো খেজুর খাওয়ার নিয়ম। কোন ব্যক্তি যদি খেজুর নিয়মিত সেবন করে তাহলে তার শরীরে রোগ নিরাময় হবে। কখন কিভাবে খেলে আমাদের শরীরের উপকার হবে তা আজকে আমরা জানবো।
রাতের বেলায় যখন আপনি ঘুমাতে যাবেন। তখন খেজুর ও দুধ একসাথে মিক্স করে সেবন করতে পারেন। সাধারণত খেজুরের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এছাড়াও আপনি সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠে খেজুর খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরে সারাদিনের জন্য ক্লান্তি অনুভব হবে না। আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে খেজুর সহায়তা করে। সাধারণত খেজুরের মধ্যে ফাইবার এর পরিমাণ থাকে যা আমাদের পেট কে ক্ষুধা থেকে নিবারন করে।
তবে আমরা আরেকটি বিষয় জেনে নেই বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী। যাদের ডায়াবেটিস রোগ আছে আপনারা খেজুর নিয়মিত সেবন করে যেতে পারেন তবে অতিরিক্ত নয়। পরিমাণমতো আপনাকে খেতে হবে তা না হলে সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
যাদের শারীরিক দুর্বলতা ক্লান্তি ভাব হয়। তাদের জন্য খেজুর নিয়মিত খাওয়া ভালো। সাধারণত যারা রক্ত শূন্যতায় ভোগে তাদের জন্য খেজুর একটা প্রতিষেধক। খেজুর আয়রনের অভাব দূর করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও খেজুর আমরা সাধারণত রমজান মাসে ইফতারের সময় বেশি খেয়ে থাকি। আর এই খেজুরের মধ্যে রয়েছে অনেক বরকত। এছাড়াও সারা বছর আপনি খেজুর খেতে পারেন। তবে আপনাকে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। কোন রোগের প্রতিষেধক ঔষুধ হিসেবে যদি আপনি খান তাহলে নিয়মিত আপনাকে খেজুর সেবন করতে হবে। তাহলে আপনি এর পরিপূর্ণ প্রতিফল পড়ে যাবেন।
উপসংহারঃ
খেজুর এমন একটি উপকারী ফল যা আমাদের পুষ্টির চাহিদা পরিপূর্ণ মেটাতে সক্ষম। তাই আপনারা বিশেষ করে খেজুর সর্বসময় খেতে পারেন। এছাড়াও খেজুর আমাদের দেহের শক্তি যোগান দেয়। যা আমাদের প্রতিনিয়ত প্রয়োজন।
আরো দেখুনঃ