তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও দোয়া

ইসলামে তাহাজ্জুদ নামাজ হলো অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ একটি নফল ইবাদত, যা গভীর রাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে আদায় করা হয়। কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী, এই নামাজ বান্দার গুনাহ মোচন, দোয়া কবুল ও জান্নাত লাভের এক বিশেষ উপায়। যারা রাত্রির নিঃস্তব্ধতায় উঠে তাহাজ্জুদের মাধ্যমে আল্লাহর সামনে সিজদাহ করে, তাদেরকে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে ভালোবাসেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও রাকাত সংখ্যা

তাহাজ্জুদ নামাজ শুরু হয় ইশার নামাজের পর থেকে এবং শেষ হয় ফজরের আজান পর্যন্ত। তবে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। এই নামাজ ন্যূনতম ২ রাকাত এবং সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১২ রাকাত পর্যন্ত আদায় করা যায়। রাসূল (সা.) সাধারণত ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন এবং এরপর বিতর নামাজ আদায় করতেন।

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য আগে ঘুম থেকে জেগে নিতে হবে। যেহেতু এটি নফল নামাজ, তাই ইচ্ছা করলেই পড়া যায় তবে নিয়ম অনুযায়ী ইশার নামাজ আদায় করার পর কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে তাহাজ্জুদের জন্য জেগে ওঠাই উত্তম।
নিয়মাবলী:

  • পবিত্র অবস্থায় ওয়াজু করে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে।

  • ২ রাকাত করে সালাত আদায় করতে হবে।

  • প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর যেকোনো সূরা পড়া যায়।

  • শেষ রাকাতে দোয়া ও ইস্তিগফার করা উত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজের পর পড়ার দোয়া

তাহাজ্জুদের পর দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সময় অনেক সময় ধরে দোয়া করতেন। নিচে একটি দোয়া উল্লেখ করা হলো যা তাহাজ্জুদের পর পড়া যেতে পারে:

আরবি দোয়া:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِي وَعَافِنِي وَارْزُقْنِي

উচ্চারণ:
“আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়ারহামনি ওয়াহদিনি ওয়া’আফিনি ওয়ারজুকনি”

বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, দয়া করুন, সঠিক পথ দেখান, সুস্থতা দিন এবং রিজিক দিন।”

এছাড়াও আপনি নিজের ভাষায় মন খুলে দোয়া করতে পারেন। এটি আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের একটি সেরা মুহূর্ত।

তাহাজ্জুদ নামাজ মুসলমানের জীবনে এক আত্মিক প্রশান্তির নাম। এই নামাজ বান্দার গুনাহ মোচনের দরজা খুলে দেয় এবং আল্লাহর রহমত লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ২ রাকাত তাহাজ্জুদ আদায়ের অভ্যাস গড়ে তুললে জীবনের বহু জটিলতা সহজেই দূর হয়ে যেতে পারে।

Leave a Comment