ভাঙ্গা টু কুষ্টিয়া ট্রেনের ভাড়া ও সময়সূচী ২০২৫

বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রাজধানী ও মধ্যাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করতে রেলপথের উন্নয়ন এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প চালু হওয়ার পর ভাঙ্গা হয়ে কুষ্টিয়া পর্যন্ত ট্রেনযাত্রা অনেক সহজ ও দ্রুত হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন।

২০২৫ সালে এই রুটে আধুনিক আন্তঃনগর ট্রেন চালু থাকায় যাত্রীদের মধ্যে আগ্রহ আরও বেড়েছে। এই নিবন্ধে আপনি জানতে পারবেন ভাঙ্গা টু কুষ্টিয়া ট্রেনের সময়সূচী, টিকিট মূল্য, এবং অনলাইনে টিকিট বুকিং পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

ভাঙ্গা টু কুষ্টিয়া ট্রেনের সময়সূচী ২০২৫

ভাঙ্গা থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত রেলপথে বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন পরিচালনা করছে। এই ট্রেনগুলো নিয়মিত চলাচল করে এবং ভ্রমণকারীদের আরামদায়ক সেবা প্রদান করে। নিচে সময়সূচী দেওয়া হলোঃ

ট্রেনের নামছাড়ার সময় (ভাঙ্গা)পৌঁছার সময় (কুষ্টিয়া)সাপ্তাহিক বন্ধের দিন
সুন্দরবন এক্সপ্রেসসকাল ৯:১০ মিনিটদুপুর ১:৩০ মিনিটবুধবার
চিত্রা এক্সপ্রেসরাত ৮:০০ মিনিটরাত ১১:৪৫ মিনিটসোমবার

সময়সূচী বাংলাদেশ রেলওয়ের ২০২৫ সালের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী প্রণীত।
ট্রেনের সময় আবহাওয়া বা রেলওয়ে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে, তাই যাত্রার আগে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট eticket.railway.gov.bd থেকে যাচাই করে নিন।

এই দুইটি ট্রেনই ভাঙ্গা থেকে সরাসরি কুষ্টিয়ার দিকে যাত্রা করে, মাঝপথে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, ঈশ্বরদীসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামার সুযোগ রয়েছে।

ভাঙ্গা টু কুষ্টিয়া ট্রেনের টিকিট মূল্য ২০২৫

টিকিটের মূল্য নির্ভর করে ট্রেনের আসন শ্রেণি ও সুবিধার ওপর। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী নিচের টেবিলটি দেখুনঃ

শ্রেণিটিকিট মূল্য (টাকা)
শোভন২৪০ টাকা
শোভন চেয়ার২৯০ টাকা
স্নিগ্ধা (AC Seat)৪৮০ টাকা
AC বার্থ৮৫০ টাকা

অনলাইনে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য।
শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে নির্দিষ্ট ছাড় প্রদান করে থাকে।

টিকিট সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো অনলাইন বুকিং সিস্টেম, যা যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনের ঝামেলা থেকে মুক্তি দেয়। নিচে প্রক্রিয়াটি দেখানো হলোঃ

  1. অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান eticket.railway.gov.bd

  2. নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে লগইন করুন

  3. যাত্রার তারিখ, ট্রেনের নাম ও শ্রেণি নির্বাচন করুন

  4. বিকাশ, নগদ, রকেট বা ব্যাংক কার্ডে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন

  5. টিকিটটি ইমেইল বা মোবাইল অ্যাপে সংরক্ষণ করুন

ভাঙ্গা টু কুষ্টিয়া ট্রেন ভ্রমণের সুবিধা ও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা

ভাঙ্গা থেকে কুষ্টিয়া ট্রেনে যাত্রা কেবল সাশ্রয়ী নয়, বরং নিরাপদ ও আরামদায়কও বটে। ট্রেনে যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত আসন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচ এবং পরিষ্কার পরিবেশ রয়েছে। নিচে কিছু সুবিধা ও পরামর্শ দেওয়া হলোঃ

  • ট্রেন ভ্রমণে যানজটের ঝামেলা নেই, সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।

  • শোভন চেয়ার ও স্নিগ্ধা শ্রেণিতে আরামদায়ক আসন ব্যবস্থা রয়েছে।

  • অনলাইন টিকিটিং ব্যবস্থা যাত্রীদের সময় বাঁচায়।

  • যাত্রার আগে টিকিট যাচাই করুন এবং অন্তত ৩০ মিনিট আগে স্টেশনে উপস্থিত থাকুন।

  • লাগেজ নিজের কাছে রাখুন এবং টিকিট হারিয়ে না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

২০২৫ সালের নতুন রেল সংযোগ প্রকল্পের ফলে ভাঙ্গা থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত যাত্রার সময় আগের চেয়ে কমে এসেছে, যা যাত্রীদের জন্য একটি বিশাল সুবিধা।

ভাঙ্গা থেকে কুষ্টিয়া রুটটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ, যা দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য দ্রুত ও আরামদায়ক যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করেছে। ২০২৫ সালের হালনাগাদ সময়সূচী ও টিকিট ভাড়ার মাধ্যমে যাত্রীরা এখন আরও সহজে পরিকল্পনা করতে পারছেন তাদের ভ্রমণ।

বাংলাদেশ রেলওয়ের আধুনিক ব্যবস্থা, সময়নিষ্ঠতা ও নিরাপদ যাত্রা ট্রেনকে আজ দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পরিবহন মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই আপনি যদি কুষ্টিয়া ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন, তাহলে ভাঙ্গা থেকে ট্রেনে যাত্রা হতে পারে আপনার জন্য সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও উপভোগ্য অভিজ্ঞতা।

Leave a Comment